Sunday, August 18, 2019

আধুনিক বাইবেল-বিশেষজ্ঞদের ভাষ্য | পর্ব ২

এদিকে মথির ৩x১৪- এর অর্থ খুজতে গিয়ে কার্ডিন্যাল ডানিয়েলুর মতো বিজ্ঞ লেখকও অদ্ভুত সব ধ্যান-ধারণার পরিচয় দিয়েছেন। আমরা সুধি পাঠক-পাঠিকাবর্গের অবগতির জন্য তার কিছুটা নমুনা তুলে ধরছি। যেমন, “এর দ্বারা যা বুঝানো হয়েছে, তা ইহুদী মারফতী-ভেদের অতি সাধারণ দশ সপ্তাহের গুপ্ত রহস্য। হজরত আদম থেকে হজরত ইবরাহীম পর্যন্ত যে সময়কাল, তার জন্য ধরা হয় প্রথম তিন সপ্তাহ। দশ সপ্তাহের দশ থেকে এই তিন বাদ দিলে বাকি থাকে সাত। এর থেকে ছয় নিয়ে সাতের সাথে গুণ করলেই পাওয়া যাবে ১৪-নামের ৩-গ্রুপের গুণফল। বাকি যে সপ্তাহটি থাকে, সেই সপ্তমের শুরু যীশুখ্রীস্ট থেকেই; কেননা তিনি যে সময়ে আবির্ভূত হয়েছেন, তা থেকেই সূচনা ঘটেছে বিশ্বের সপ্তম জামানার।” এ ধরনের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ সম্পর্কে “মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন' ছাড়া আর কি কথাই বা বলা যেতে পারে, বলুন! more...

আধুনিক বাইবেল-বিশেষজ্ঞদের ভাষ্য

কার্ডিন্যাল ডানিয়েলু তার “দি গসপেল অব চাইন্ডহুড” (১৯৬৭) নামক পুস্তকে” মথির এই “সংখ্যাতাত্ত্বিক চাতূর্যের' প্রতীক-অর্থ নিয়ে সর্বাধিক গুরুত্বসহকারে এমনভাবে আলোচনা করেছেন যেন এর মধ্যেই যীশুর বংশ-তালিকার সকল প্রমাণ নিহিত । উল্লেখ্য যে, লুকও এই বিষয়টার উপরে গুরুত্ব দিয়ে গেছেন। কার্ডিন্যাল ডানিয়েলুর মতে, মথি ও লুক উভয়েই ছিলেন “ঐতিহাসিক' এবং তাদের “ঐতিহাসিক অনুসন্ধান' সাফল্যজনকভাবে সম্পন্ন করার পরই তারা “এই বংশ-তালিকা' গ্রহণ করেছেন- “খোদ যীশুখ্রীস্টের পারিবারিক মোহাফেজখানা বা সংরক্ষণাগার থেকে ।' বলাই বাহুল্য যে, যীশুখ্রীস্টের এ ধরনের পারিবারিক মোহাফেজখানার কোনো অস্তিত্ব কখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি । more...

বাইবেলের নতুন নিয়ম | পর্ব ৫

ফাদার কানেনগিয়েসার যাতক বলেছেন, 'বিরুদ্ধপক্ষীয়দের মোকাবেলায় রচিত' যীশুশ্বীস্ট সংক্রান্ত নানা ধরনের বিতর্কের মোকাবেলায় তখন সে ধরনের পৃস্তক প্রচুর পরিমাণে রচিত হয়েছিল । আর এসব রচনা! অধিক মাত্রায় প্রকাশিত হচ্ছিল তখন, যখন পৌলের মতবাদের ধারায় গড়ে ওঠা খ্রীস্টধর্ম অন্যান্য খ্রীস্টান মতবাদের উপরে সুনিশ্চিতভাবে বিজয় লাভ করছিল। বলা অনাবশ্যক ৩৯ এই পর্যায়ে এই বিজয়ী পক্ষ এসব রচনা থেকে যাচাই-বাছাই করে নিয়ে নিজেদের জন্য অফিসিয়াল বা সরকারীভাবে স্বীকৃত সুসমাচারের পুস্তক সংকলন করে পরবর্তীকালে এই অফিসিয়াল সুসমাচারসমূহ প্রামাণ্য হিসাবে গৃহীত হয় এবং বাদবাকি যাবতীয় রচনা- যেগুলি তখনকার পোলীয় খ্রীস্টান গির্জাসংস্থা কর্তৃক অনুসৃত ধর্মীয় মতবাদের বিরোধী বলে সাব্যস্ত হয়েছিল- সেগুলি অপ্রামাণ্য হিসাবে হয় নিন্দিত ও বর্জিত। more...

বাইবেলের নতুন নিয়ম | পর্ব ৪

পৌলীয় খ্রীস্টানেরা রাজনৈতিক ও সামজিকভাবে ইহুদীদের থেকে নিজেদের আলাদা করে দিতে সক্ষম হলোঃ তারা হয়ে পড়ল তৃতীয় একটি গোষ্ঠী। কিন্তু তবুও ১৪০ খ্রীষ্টাব্দে ইহিুদীদের বিদ্রোহ ঘোষণার আগে পর্যন্ত জুডিও-ক্রিশ্চিয়ানদের মতবাদই সাস্কৃতিক ক্ষেত্রে নিজেদের প্রাধান্য বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছিল।” more...

Saturday, August 10, 2019

বাইবেলের নতুন নিয়ম | পর্ব ৩

কাডিন্যাল ডানিয়েলু তাঁর নিবন্ধের এই পর্যায়ে জুডিও-ক্রিশ্চিয়ানদের ধর্মীয়-রচনার উদ্ধৃতি তুলে ধরে এই সম্প্রদায়ের লোকেরা যীশুকে যে কি চোখে দেখতেন, তারও বর্ননা দিয়েছে। এতে দেখা যাচ্ছে গোড়াতেই যীশুর সঙ্গি-সাথি তথা প্রেরিতদের কেন্দ্র করে এই জুডিও-ক্রিশ্চিয়ান সম্প্রদায় গড়ে উঠেছিল। তাঁরা ধর্মগ্রন্থ হিসেবে গ্রহন করে ছিল হিব্রু ভাষায় রচিত সুসমাচারসমূহ (মিসরের এক জুডিও-ক্রিশ্চিয়ান সম্প্রদায়ের নিকট থেকে এই হিব্রু সুসুমাচারগুলি পাওয়া গেছে); ক্লেমেন্ট রচনাবলী, যেমন- হোমিলিস ও রিকগনিশনস, হাইপোটাই পোসিস; জেমস-এর দ্বিতীয় এ্যাপোক্যলিপস এবং টমাস রচিত সুসমাচার। more...

বাইবেলের নতুন নিয়ম | পর্ব ২

এই সময়কার খ্রীস্টধর্ম-সম্পর্কিত বহূ তথ্য ইতিমধ্যে আবিষ্কৃত হয়েছে এবং আবিষ্কৃত এইসব তথ্যের ভিত্তিতে আধুনিক অনেক গবেষনাও হযেছে পরিচালিত। এই গবেষকদের মধ্যে অন্যতম হলেন কার্ডিন্যাল ডানিয়েলু। ১৯৬৭ সালের ডিসেম্বরে তিনি স্টাডিজ পত্রিকার ‘এ নিউ রিপ্রেজেন্টেশন অব দি অরিজন্স অব ক্রিশ্চয়ানিটিঃ জুডিও- ক্রিশ্চিয়নিটি’ নামে এক প্রবন্ধ প্রকাশ করেন। এই প্রবন্ধে তিনি এতদসংক্রান্ত অতীতের যাবতীয় রচনাবলী পর্যলোচনা করেন এবং ইতিহাসের ধারা অনুসরন করে বাইবেলের সুসমাচারগুলি কখন রচিত হয়েছিল, ,তার সঠিক সময়কাল সম্পকে আমাদের অবহিত করেন। । অধুনা জনগনের মধ্যে যে সব বাইবেল প্রচলিত, সেগুলিতে নতুন ‍নিয়মের সুমাচার সুমাচার রচনার যে সময়কাল উল্লেখ রয়েছে, কার্ডিন্যাল ডানিয়েলুর গবেষনার মধ্যমে প্রাপ্ত সময়কাল তা থেকে সম্পূর্ন ভিন্ন। আমি এখানে তাঁর সেই নিবন্ধের সংক্ষিপ্তসার প্রয়েজনীয় উদ্বৃতিসহ তুরে ধরছিঃ more...

Friday, August 9, 2019

বাইবেলের নতুন নিয়ম

বেশির ভাগ খ্রীস্টানই-বিশ্বাস করে যে, বাইবেলের সুসমাচারসমূহ (ইঞ্জিল-১-৪ খণ্ড) রচিত হয়েছে এমন সব ব্যাক্তির দ্বারা যাঁরা যাঁরা ছিলেন যীশুখ্রীস্টের জীবনের ঘটনাবলীর প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী। সুতরাং এইসব সুসমাচার যীশুখ্রীস্টের জীবনী ও তাঁর প্রচারর্কয সম্পর্কে যে সব বর্ননা লিপিবদ্ধে আছে। সেগুলি র্তকাতীতভাবেই সত্য ও প্রমান্য। এখ্যানে স্বাভাতই যে প্রশ্নটি জাগে তা হলো সুসমাচারসমূহের প্রমানিকতার এই গ্যারান্টি সত্বেও এসবের মধ্যে বর্নিত যীশুর শিক্ষা-সংক্রান্ত বিষয়ে এত প্রশ্ন উঠতে পারে এবং যীশুর নির্দেশে গঠিত গির্জার প্রতিষ্টানগত বৈধতা নিয়েই বা কিভাবে কেউ সন্দেহ পোষন করতে পারেন? যত প্রশ্ন উঠুক এভাবেই অধুনা বাইবেলের যেসব জনপ্রিয় সংষ্কার প্রমানিত হচ্ছে, সেগুলিতে হমেসা এ ধরনের সস্তা বক্তব্য তুলে ধরে প্রশ্নকারীদের মুখ বন্ধ রাখার প্রবনতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।। more...

যেভাবে আবিস্কার হলো গুটি বসন্তের টিকা | এডওয়ার্ড জেনার | পর্ব ৪

ফলে যারা তাঁর সমালোচনা করত ক্রমেই তারা তাদের মাথা নিচু করতে বাধ্য হলেন। এবার তারাই নিন্দা ছেড়ে পঞ্চমুখ হয়ে উঠলেন জেনারের প্রশংসায় । এ-ভাবেই জেনারের নাম ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে । দেশব্যাপী ব্যবহৃত হতে থাকে তার আবিষ্কৃত টিকা। শুধু তাই নয়, চিকিৎসাবজ্ঞানের একজন খ্যাতিমান পুরুষ হিসেবে সম ইউরোপেও ছড়িয়ে পড়ে তার নাম। হল্যান্ড এবং ইংল্যান্ড এবং সুইজারল্যান্ডের ধর্মযাজকরা,যাঁরা এতদিন জেনারের নিন্দায় সোচ্চার ছিলেন,তাঁরা নিজেরাই এবার জেনার আবিষ্কৃত টিক্ গ্রহনের জন্য মানুষকে উপদেশ দিতে লাগলেন চিকিৎসাশাস্ত্রে এই বিস্মযকর অবদানের জন্য ব্রিটিশ পার্লামেন্ট তাঁকে ১৮০২. থেকে ১৮০৫ খ্রীস্টাব্দের মধ্যে ২০,০০০ পাউন্ড অনুদান প্রদান করে। more...

যেভাবে আবিস্কার হলো গুটি বসন্তের টিকা | এডওয়ার্ড জেনার | পর্ব ৩

বিষয়টা নিয়ে তিনি তার সমকক্ষ অন্য ভাক্তারদের সাথেও আলাপ-আলোচনা চালান : সবাই এ নিয়ে বিস্থয় প্রকাশ করতে থাকেন। কিন্তু কোনো সমাধানে পৌছুতে পারেন না। এরপর তিনি নিজেই ভয়ঙ্কর এক পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়ে বসেন। পরীক্ষা ছিল খুবই ঝুঁকিপূর্ণ । কারণ তার অনুমান যদি সত্যি না হয়,তা হলে বিনষ্ট হবে একটি মূলাবান এক শিশুর জীবন আর তিনি নিজেও এই অপরাধের জন্য শাস্তির সম্মুখীন হবেন। ১৭৯৬ বিসটান্দে তিনি একটি গো-বসন্ত রোগাক্রান্ত মেয়ের হাতের বসস্তের পুঁজ তুলে নেন সিরিঞ্জের সাহায্যে । তারপর সেই পুঁজ জেমস ফিলিপস নামের এক সুস্থ সবল বালকের শরীরে প্রবিষ্ট করান । দেখা গেল কয়েক সন্তাহের মধোই বালকটি আক্রান্ত হয়ে পড়ছে গো-বসন্তে। আরো আছে...

যেভাবে আবিস্কার হলো গুটি বসন্তের টিকা | এডওয়ার্ড জেনার | পর্ব ২

এধরনের একটা ঘটনা জেনার ছাত্রজীবনেই একার প্রত্যক্ষ করেছিলেন। এক গাঁয়ে দেখা দিয়েছিল বসন্ত মহামারী । বাড়ির সবাই বসন্ত রোগে আক্রান্ত, কিনতু দেখা গেল সবার সেবা-শুশ্রূষা করার পরও বাড়ির কাজের মেয়েটির কিছুই হয়নি। সে দিব্যি ভালো আছে। ব্যাপারটা দেখে জেনার খুবই অবাক হন। তিনি পরীক্ষা করে আরও অবাক হয়ে যান। দেখেন, মেয়েটির কেবল দুটো হাত গো-বসন্ত রোগে আক্রান্ত । অর্থাৎ গো-বসন্ত রোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণেই সে বসন্ত রোগের হাত থেকে রেহাই পেয়েছে। পরে জেনার এই ঘটনার সূত্র ধরেই আবিষ্কার করেন তার জগদ্বিখ্যাত 'বসস্তের টিকা' এবং এই কালব্যাধির হাত থেকে রক্ষা করেন পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষকে। তাঁর একটিমাত্র আবিষ্কারক এডওয়ার্ড জেনারের জন্ম ইংল্যান্ডের সোডবারি জেরার ব্রিস্টলের কাছাকাছি বার্কলে শহরে ১৭৪৯ খ্রিস্টাব্দের ১৭ মে ছেলেবেলা থেকেই তাঁর ইচ্ছে ছিল তিনি একজন চিকিৎসাবিজ্ঞানী হবেন । তাই তিনি মেডিসিন নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। আরো আছে...

বাইবেল পুরাতন নিয়ম | খ্রীস্টান লেখকদের বিভ্রান্তি | পর্ব ৭

বিজ্ঞানের বিচারে বাইবেলের বাণীর এতসব ত্রান্তি সম্পর্কে খ্রীষ্টান লেখকদের এ ধরনের মানসিকতাই প্রমাণ করে যে, এতদ্সংক্রান্ত আলোচনা ওইসব লেখকের জন্য কতোটা অস্বস্তিকর। এর দ্বারা আরো প্রমাণিত হয় যে, যুক্তি-জ্ঞানসম্পন্ন যে কাউকেই আজ বাইবেলের বাণীর অযৌক্তিকতা হয় স্বীকার করে নিতে হবে, নতুবা তাঁকে মানতেই হবে যে, ওইসব বাণী মানুষেরই রচনা। কিন্তু যাই করা হোক, বাইবেলের ওইসব বাণী যে মোটেও ওহী বা প্রত্যাদেশপ্রাপ্ত অর্থাৎ অবতীর্ণ ঐশী বাণী নয়, সেটা সাব্যস্ত হতে আর বাকি থাকে না। ঐশী গ্রন্থ হিসাবে বাইবেল যে কতোটা সঠিক, সে সম্পর্কে খ্রীস্টান মহলে এর অস্বস্তিকর অবস্থা আরো প্রকটভাবে ফুটে উঠেছে দ্বিতীয় ভ্যটিক্যান কা্‌উন্সিল, অধিবেশনে (১৯৬২-১৯৬৫)। তিন তিনটি বছর ধরে আলাপ-আলোচনা চালাবার পরেও এই অধিবেশনে চূড়ান্ত কোন প্রস্তাবের ব্যাপারে ঐকমত্যে পৌছান সম্ভব হযনি। আরো আছে...

বাইবেল পুরাতন নিয়ম | খ্রীস্টান লেখকদের বিভ্রান্তি | পর্ব ৬

এদিকে কোন কোন আধুনিক ধর্মবেত্তা এসব গরমিলের মধ্যে মিল দেখাতে গিয়ে অর্থাৎ ইতিহাস ও বিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠিত সত্যের সাথে বাইবেলের ওল্ড টেস্টামেন্টে বর্ণিত ভ্রান্তিপূর্ন নানান ঘটনার সামঞ্জস্য বিধান করতে গিয়ে সত্যের চিরাচরিত সংজ্ঞার পরিবর্তন সাধনেও ব্রতী হয়েছেন। বাইবেলের বিধৃত সত্যের উপরে আলোকপাত করতে গিয়ে ওইসব লেখক তাদের নানান রচনায় 'সত্য' সম্পর্কে যেসব অদ্ভুত অদ্ভুত বক্তব্য পেশ করার প্রয়াস পেয়েছেন, বর্তমান পুস্তকে তার বিশদ আলোচনার তেমন কোন অবকাশ নেই। তবুও নমুনা হিসাবে লরেটজ-এর "হোয়াট ইজ দা ট্রুথ অব দা বাইবেল?‘১ পুস্তকে প্রদত্ত বিজ্ঞান সম্পর্কিত একটা সিদ্ধান্ত তুলে ধরছি। আরো আছে...

যেভাবে আবিস্কার হলো গুটি বসন্তের টিকা | এডওয়ার্ড জেনার

আজ থেকে পঞ্চাশ বছর আগেও বসন্ত রোগ ছিল এক মারাত্মক 'আতন্ক। পৃথিবীর সল্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থা ছিল আরও করুণ। যখন কোনো গ্রামে বসন্ত রোগ দেখা দিত, ক্রমে তা মহামারীর রূপ ধারণ করে, মৃত্যুর কারণ ঘটাত হাজার হাজার মানুষের । বসন্ত রোগে আক্রান্ত হলে তখন খুব কম লোকই বেঁচে উঠত । কেউ প্রাণে বেঁচে গেলেও সারাজীবনের জন্য শরীরে বয়ে বেড়াতে হতো এই রোগের বীভৎস ক্ষতচিহ্ন। এই ভয়ঙ্কর কালব্যাধির হাত থেকে যে মহান রক্ষ্ করেছেন পৃথিবীর মানুষকে তার নাম বিজ্ঞানী এওয়ার্ড জেনার (Edward Jenner)তাঁর আবিষ্কৃত বসন্তের টিকার ব্যাপক ব্যবহারের ফলে শতান্দীকালের মেধ্যেই এই রোগ আজ নির্মূল করা সম্ভব হয়েছে। আরো আছে...

বাইবেল পুরাতন নিয়ম | খ্রীস্টান লেখকদের বিভ্রান্তি | পর্ব ৫

পক্ষান্তরে আধুনিক যুগের বিশেষজ্ঞদের বেলায় দেখা যাচ্ছে, তারা বাইবেলের রচনায় ভ্রান্তি অপনোদনের চেয়ে ভ্রান্তি সংক্রান্ত অভিযোগগুলি খণ্ডন করার জন্যই বিশেষ পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। বাইবেলের আদি পুস্তকের ভূমিকা লিখতে গিয়ে ফাদার ডি ভক্স জানাচ্ছেন, কেন তিনি বাইবেলের বক্তব্যসমূহ ইতিহাস ও বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে অগ্রহনযোগ্য হওয়া সত্বেও সেগুলিকে যে কোন মূল্যে সমর্থন করতে চান। এই একই আলোচনায় তিনি "যে নিয়ম ও পদ্ধতিতে আধুনিক যুগের মানুষ ইতিহাসের চুলচেরা বিচার-বিশ্লেষণ করে থাকেন,” সে পদ্ধতিতে বাইবেলে বর্ণিত ইতিহাসকে বিশ্লেষণ না করারও আবেদন জানাচ্ছেন। তাঁর এই বক্তব্য থেকে মনে হয় যেন যে কোন পদ্ধতিতেই ইতিহাস রচনা ও আলোচনা সম্ভব। অথচ (যে কেউ স্বীকার করবেন যে,) ইতিহাস যখন সঠিকভাবে উপস্থাপিত করা না হয় তখন তা আর ইতিহাস থাকে না, হয়ে পড়ে প্রতিহাসিক উপন্যাস। কিন্তু বর্তমানের যুক্তি-বিজ্ঞানের সুপ্রতিষ্ঠিত নিরিখে এ ধরনের কোন এতিহাসিক উপন্যাসকে এখন আর সঠিক ইতিহাস হিসেবে গ্রহণ করা সম্ভব নয়। অথচ এই আধুনিক ভাষ্যকার ভূতত্ব, জীবাশ্ম বিজ্ঞান কিংবা প্রাগৈতিহাসিক কোন বিষয়কে যে ভাবে বিচার-বিশ্রেষণ করা হয়, বাইবেলের কোন রচনাকে সে ধরনের কোন তথ্য ও প্রমাণ ছারা যাচাই-বাছাই করে নেওয়ারও বিরোধী। আরো আছে...

বাইবেল পুরাতন নিয়ম | খ্রীস্টান লেখকদের বিভ্রান্তি | পর্ব ৪

যা হোক, আমরা এখানেই কার্ডিন্যাল ড্যানিয়েলুর আলোচনার ইতি টেনে ফিরে যেতে চাই সেই মধ্যযুগে, যখন বাইবেলকে ঠিক যেমনটি আছে, তেমনটিই বিনা প্রশ্নে মেনে নিতে হতো এবং কনফরমিস্ট (কনফরমিস্ট তাঁদের বলা হয় যাঁরা চার্চ অব ইংল্যাণ্ডের উপাসনা- পদ্ধতি বিনা দ্বিধায় মেনে চলেন) ছাড়া বাইবেল সম্পর্কে আলোচনা করার কোনো অধিকার কারো ছিলো না। কিন্তু মধ্যযুগের এসব বিধি-নিষেধ আরোপের মুখেও সে বিষয়ে বাইবেলের আলোচনায় উচ্চ পর্যায়ের যুক্তি-বিজ্ঞানের প্রয়োগ আমরা লক্ষ্য করি। এই প্রসঙ্গে সেন্ট অগাস্টিনের নাম উল্লেখ করা যেতে পারে। বাইবেলের ব্যাখ্যায় যুক্তি-বিজ্ঞানের প্রয়োগ ছিলো তাঁর নিজস্ব চিন্তার ফসল এবং সে যুগে তিনি একাই এই যুক্তি-বিজ্ঞানের ধারাকে অনেক দূর পর্যন্ত এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। আরো আছে...

বাইবেল পুরাতন নিয়ম | খ্রীস্টান লেখকদের বিভ্রান্তি | পর্ব ৩

আরেক পন্থায়ও বাইবেলের বিতর্কিত এবং যুক্তির বিচারে অথহণযোগ্য রচনাসমূহ সাধারণ্যের নিকট গ্রহণযোগ্য বলে চালানোর প্রয়াস চলে। তা হলো, এ ধরনের রচনার ব্যাপারে ভাষ্যকারদের যুক্তিহীনভাবে সমর্থন প্রদানের প্রবণতা । এই প্রবণতায় তাঁরা সংশ্লিষ্ট রচনার সঠিকত্ব বিচারের গুরুত্ব এড়িয়ে পাঠকদের মনোযোগ ভিন্ন দিকে পরিচালিত করার প্রয়াস পেয়ে থাকেন। কার্ডিন্যাল ড্যানিয়েলুর মহাপ্লাবন সংক্রান্ত বাইবেলের বক্তব্যের ব্যাখ্যা এর প্রধান উদাহরণ। ‘লিভিং গড’ পত্রিকায় (Dieu vivant, 38,1974, PP 95- 112) প্রকাশিত ‘ফ্লাড, ব্যাপ্টিজম, জাজমেন্ট’ শীর্ষক রচনায় তিনি বলেন ‘‘চার্চের প্রাচীন বিবরনগুলিতে দেখা যায়, মহাপ্লাবনের একটি ধর্মতান্তিক ব্যাখ্যা রয়েছে। চার্চের এসব বিবরণীর মতে, এই মহাপ্রাবন ঘটনার মধ্যে যীশুখ্রীস্ট ও চার্চের সাদৃশ্য রয়েছে -এই ঘটনা বস্তুতই তাৎপর্যপূর্ণ।” আরো আছে...

বাইবেল পুরাতন নিয়ম | খ্রীস্টান লেখকদের বিভ্রান্তি | পর্ব ২

বলা অনাবশ্যক যে, এভাবেই এই লেখক জনপ্রিয় এক লোককাহিনীকে আসমানী-বাণীর অংশ হিসাবে উপস্থাপনের যৌক্তিকতা খুঁজে নিতে চেয়েছেন এবং বলতে চেয়েছেন যে, মানুষের বিশ্বাসবোধ জাগ্রত করার জন্য ধর্মীয় শিক্ষার উপকরণ হিসাবে এ ধরনের কাহিনী ব্যবহারে দোষের কিছু নেই। কিন্তু লেখক হয়ত ভুলে গেছেন যে, তাঁর এই অত্নপক্ষ সমর্থনের দ্বারা প্রমাণিত হচ্ছে, আল্লাহর বাণী হিসাবে পরিগৃহীত ও পবিত্র বলে স্বীকৃত এই বাইবেল রচনার বেলায় সংশ্লিষ্ট লেখকবৃন্দ কতটা স্বাধীনভাবে নিজেদের কলম চালিয়ে গেছেন। আর আসমানী কিতাব হিসাবে পরিচিত বাইবেলের কোনো একটি বিষয় লিপিবদ্ধ করার ব্যাপারে মানুষের এ ধরনের হস্তক্ষেপের কথা একবার যদি স্বীকার করে নেওয়া হয়, তাহলে গোটা বাইবেল রচনার প্রশ্নেও মানুষের স্বার্থ চরিতার্থ করার বিষয়টা সাব্যস্ত হয়ে পড়ে না কি? যদি বলা হয় যে, এই হস্তক্ষেপের পিছনে ধর্মীয় উদ্দেশ্য বিদ্যমান ছিলো, তাহলে তো এ ধরনের সকল হস্তক্ষেপই বৈধ হয়ে পড়ে। শুধু তাই নয়, এভাবে খ্রীস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীর পুরোহিত-লেখকগণের দ্বারা বাইবেলের রদবদল সাধনের বিষয়টাও যুক্তিসঙ্গত বলেই বিবেচনা করতে হয়। এমনকি যে ধর্মীয় ভাবাবেগে তাড়িত হয়ে ওইসব লেখক সেদিন বাইবেলের মধ্যে যতসব আজগুবি রচনার সমাবেশ ঘটিয়েছিলেন, যার কিছু কিছু পরিচয় ইতিমধ্যে আমরা পেয়েছি, সে সম্পর্কেও তাহলে বলার আর কিছুই থাকে না। আরো আছে...

Tuesday, August 6, 2019

বাইবেল পুরাতন নিয়ম | খ্রীস্টান লেখকদের বিভ্রান্তি

বাইবেলের এই পুঞ্জীভূত ভূল, অবাস্তবতা ও স্ববিরোধিতার প্রশ্নে খ্রীস্টান ভাষ্যকার ও ব্যাখ্যাদাতাদের বিচিত্র মনোভাব দর্শনে যে-কেউ অবাক না হয়ে পারবেন না। অবশ্য কিছুসংখ্যক ভাষ্যকার বাইবেলের কিছু কিছু ত্রুটি-বিচ্যাতির কথা স্বীকার করে নিতে দ্বিধা করেননি এবং নিজেদের রচনায় ওইসব সমস্যার মীমাংসা খুঁজে বের করতেও চেষ্টার কোন ক্রটি রাখেননি। কিন্তু বাদবাকি ভাষ্যকার বাইবেলের ওইসব অগ্রহণযোগ্য বাণীর ব্যাপারে ভাসাভাসা আলোচনা চালিয়েই ক্ষান্ত হয়েছেন। শুধু তাই নয়, বাইবেলের প্রতিটি বাণীকে বর্ণে বর্ণে গ্রহণ করার সমর্থনেও তাঁরা জোর-বক্তব্য পেশ করেছেন। আরো আছে...

Sunday, August 4, 2019

বাইবেলের আদি উৎস | টেন-কম্যাণ্ডমেন্টস

এটা বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারন রয়েছে যে, খ্রীস্টপূর্ব ত্রয়োদশ শতকের শেষভাগে ইহুদীরা যখন কেনানে বসতি স্থাপন করেছিলো, তখন থেকেই ঐতিহ্যবাহী এসব কাহিনী লিপিবদ্ধ ও সংরক্ষনের কাজ শুরু হয়। তবে, সে লেখা যে নির্ভুল ছিলো, তা নয়। এমনকি আইন বা বিধানের মতো যেসব বিষয়ে মানুষের চাহিদা ছিলো সর্বাধিক, তেমনি অন্য আরো যেসব বিষয় স্থায়ীভাবে ধরে রাখা প্রয়োজন ছিলো। সে সব বিধান এবং বিষয়ও নির্ভুলভাবে লিখিত হয় নি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে বিধাতার নিজ হাতে রচিত বলে প্রচারিত দশটি বিধান বা টেন-কম্যাণ্ডমেন্টস। আরো আছে...

বাইবেলের আদি উৎস

পুস্তকাকারে সংকলনের পূর্বে বা্ইবেল ছিলো ঐতিহ্যবাহী জনকথা অর্থাৎ মানুষের স্মৃতিনির্ভর কাহিনি মাত্র। আদিতে এই ধরনের স্মৃতিচারনই ছিলো ভাবাদর্শ প্রচারের একমাত্র উপায়। আর এই ঐতিহ্যনির্ভর স্মৃতিকথা সম্পচারের মাধ্যম বা বাহন ছিল সঙ্গীত। আরো আছে...